আপনি যদি ঘরের মধ্যে প্রকৃতির এ
এ বিষয়ে জানার জন্য অসংখ্য বই এবং শেখানোর জন্য আছে ক্লাব। রানী ভিক্টোরিয়ার শাসনামলে টেরারিয়াম, প্রায় প্রতিটি ঘরেরই ঘরসজ্জার একটি উল্লেখযোগ্য উপকরণ হিসেবেই ছিল।বহুদিন পরে হলেও বর্তমানে এই বস্তুটি আবার মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছে।
আমি পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারলাম যে কেন এই শিল্প আবার এতদিন পর মানুষের মাঝে জায়গা করে নিল। দৃষ্টিনন্দন, তুলনাহীন আর সবচেয়ে সহজ পরিচর্যা এই তিনের মিশেল টেরারিয়ামকে দিয়েছে এই অবস্থান।
কথা না বাড়িয়ে এবার কিভাবে বানাতে হয় সেই কথায় আসি,
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
১। মাটি
২। মসের আস্তর (পুরোনো দেয়ালে জন্মানো মস)
৩। পাঁথর কণা
৪। কাঠ কয়লা
৫। পানি শুষে নেয়া পাঁথর (ভাঙ্গা পাঁথর)
৬। নদীর নুড়ি পাঁথর
৭। বিভিন্ন ধরণের গাছ ( ইনডোর প্ল্যান্ট হিসেবে পরিচিত বা ঘরের মধ্যেই জন্মায় এমন গাছ, তিন থেকে চার ধরণের ভিন্ন ভিন্ন গাছ হলে দেখতে বেশ আকর্ষণীয় হবে )
৮।আবদ্ধ কাঁচের পাত্র, কেনেস্তারা বা মুখখোলা জার ( গোল্ড ফিশ পালন করার জার কিংবা এক মুখ খোলা যে কোন জার)
কিন্তু জারটি যদি আমার চিত্রের মত দুই মুখখোলা জার হয় তবে এরকম একটা থালা ব্যাবহার করতে হবে। আর যদি একমুখ খোলা জার হয় তবে থালা ব্যাবহার করার প্রয়োজন নেই। (আমি এই কাজের জন্য প্যানকেক তৈরির পাত্র ব্যাবহার করেছি )
কার্যপদ্ধতিঃ
শুরুতেই অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের পানি শুষে নেয়ার জন্য পুরো এক স্তরের পাঁথরকণা দিতে হবে।
এর উপরে এক স্তরের কাঠ কয়লা দিয়ে ঢেকে দিয়ে তার উপর আবার আরেক স্তরের মাটি মিশ্রিত কাঠ কয়লা দিতে হবে। কাঠ কয়লা বেশি প্রয়োজন হবে যদি আমার ব্যাবহার করা কন্টেইনারের অনুরূপ হয়। কাঠকয়লার প্রধান কাজ হল বাতাসকে শোধন করা।
এবার এক স্তরের মাটি দিয়ে( চিত্রে বাজারে প্যাকেট জাত মাটি ব্যাবহার করা হয়েছে, না পাওয়া গেলে নিজেই মাটি তৈরি করে নিতে পারেন )।
এর উপর নিজের পছন্দমত গাছ লাগিয়ে, নদীর নুড়ি পাঁথর দিয়ে দিতে পারেন(ডেকোরশনের জন্য।
রঙ্গের বিচিত্রতা আনার জন্য দুই তিন রঙের গাছ ব্যাবহার করতে পারেন। আমি (Cryptanthus) নামের এই গাছটি ব্যাবহার করেছি। আমার মনে হয় সবুজের মাঝে এই গাছটি একটু নান্দনিকতা দিবে।
সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আপনি চাইলে মাটি বা প্ল্যাস্টিকের হরিণ শাবক, ডায়নোসর, কচ্ছপ বা আন্য যে কোন কিছুর খেলনা মূর্তি ব্যাবহার করতে পারেন, আমি অবশ্য খাঁচায় বসে আছে এমন একটি ছোট্ট পাখির খেলনা ব্যাবহার করেছি। এ ধরণের বস্তু আপনার টেরারিয়ামকে আকর্ষণীয় করবে নিসন্দেহে।
সবশেষে খালি জায়গাগুলো মস দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এবার স্প্রেবোতল দিয়ে সদ্য তৈরি করা বাগানে হালকা করে পানি দিতে হবে। টেরারিয়ামে দেয়া নিজস্ব পানি রিসাইকেল হয় তাই অল্প পরিমাণে পানি সেচ দিলেই চলে।
এবার জারটি সাবধানতার সাথে আপনার বাগানের উপর বসিয়ে দিন। সরাসরি সূর্যালোক থেকে দূরে রাখুন এবং অতিরিক্ত পানি দিবেন না।
বুঝার সুবিধার জন্য বা সহজে চেনার জন্য নাম্বারিং করে ঝুলিয়ে দিতে পারেন।
আপনার বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি , সৌভাগ্য আর স্থায়িত্বের জন্য বাগান পরীকে বসিয়ে দিতে পারেন।